কম্পিউটার সাক্ষরতা ও কম্পিউটার সহযোগে শিখনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। শিক্ষাক্ষেত্রে ICT-এর ব্যবহার লিখুন।

Table of Contents

কম্পিউটার সাক্ষরতা ও কম্পিউটার সহযোগে শিখন-

কম্পিউটার সাক্ষরতা হল কম্পিউটার এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত প্রযুক্তি প্রাথমিক স্তরে উৎকর্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং ক্ষমতা অর্জন। আনাকে এর সঙ্গে কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং তার কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন, কম্পিউটার সাক্ষরতার সঙ্গে একটি শর্ত হিসেবে বিবেচনা করে।’

কম্পিউটারের সহযোগিতায় শিখন প্রক্রিয়া কম্পিউটারের সহযোগিতার শিখন তক্রিয়াকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, শিক্ষা-শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের শিখনে সাহায্য করা। দ্বিতীয়ত, নতুন শিখনে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করা।

শিক্ষা-শিখন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের শিখনে সাহায্য করা কম্পিউটারের সহযোগিতায় বিখনের উদ্দেশ্য হল শিক্ষকের শ্রেণিকক্ষ শিক্ষণের পরিশ্রমকে লাঘব করা এবং সময়কে সাশ্রয় কর, যার ফলে শিক্ষক আরও বেশি করে শিক্ষাদান প্রক্রিয়া সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে সময় ব্যয় করতে সক্ষম হয়। এখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কম্পিউটার পরস্পর পরস্পরের সহযোগিতা দূর। শিক্ষক তাঁর প্রয়োজনমতো শিক্ষা উপকরণ তৈরি করে শিক্ষাদান করেন এবং শিক্ষার্থীদের শিখনে সাহায্য করেন। শিক্ষার্থী তার নিজের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষাগ্রহণ করে এবং কম্পিউটার দ্রুত প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করে।

শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার সরবরাহ করা হয়। যে বিষয়টি শিক্ষার্থী শিখবে সেই বিষয়টিকে পরিকল্পিতভাবে কতকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভত্ব করা হাং, যাকে ‘ফ্রেম বলে। প্রতিটি ফ্রেমের শেষে কিছু নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকে যা বিষয়বস্তুর ভিত্তিতেই তৈরি করা হয়। এই কাজগুলি শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং বিষয় অভিজ্ঞ সকলে |

নতুন শিখনে কম্পিউটারের সহযোগিতা– কম্পিউটারের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা নতুন জ্ঞানার্জন সহজেই করতে পারে। এখানে প্রতিটি মিলেই করে থাকেন, পরে পরিকল্পিত পাঠটি কম্পিউটারে প্রবেশ করানো হয়। শিক্ষার্থী কম্পিউটারের নির্দিষ্ট Key ব্যবহার করে প্রথম ফ্রেমটি নিয়ে আসে। শিক্ষার্থী সেটি পড়ে যখন মনে করে সে বিষয়টি বুঝতে পেরেছে তখন সে নির্দিষ্ট বোতাম টিপে উক্ত ফ্রেমের প্রশ্নগুলি নিয়ে আসে। প্রশ্নের উত্তর সঠিক হয়েছে কিনা তার জন্য সে নির্দিষ্ট বোতাম (Key) টেপে। প্রশ্নের উত্তর সঠিক হলে কম্পিউটারে একটা হাসির মুখ দেখা যায়। সঠিক না হলে কম্পিউটারে পূর্বের পাঠটি (ফ্রেম) চলে আসে। দ্বিতীয়বার যদি শিক্ষার্থী ভুল করে তখন কম্পিউটার সঠিক উত্তরটি বলে দেয়। প্রথম ফ্রেমটি সঠিক হওয়ার পর দ্বিতীয় ফ্রেম চলে আসে। এইভাবে শিক্ষার্থী পর্যায়ক্রমে সমস্ত বিষয়টি শিখে নেয়। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় এই পদ্ধতিটি মনোবিদ স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তনের ধারণা থেকে এসেছে। একথা বলা যায় প্রত্যক্ষভাবে শিক্ষকের সাহায্য ছাড়া কম্পিউটারের সহযোগিতায় শিক্ষার্থী নতুন জ্ঞান অর্জন করে

শিক্ষাক্ষেত্রে ICT-এর ব্যবহার

সারা বিশ্বব্যাপী দূরশিক্ষা অর্থাৎ Distance mode-4 ZAHIR শিক্ষাদান দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার সঙ্গেই বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী দূরেসপন্ডেন্স কলেজ, মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগ, বেসরকারি সংস্থাগুলির পুরাণ। যুক্ত স্কুল, কেন্দ্র প্রভৃতির মাধ্যমে যে শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রমগুলি পরিচালিত হয়, সেগুলিই সাধারণভাবে দূরশি ধনের অঙ্ক প্রশিক্ষণ ধরা হয়। অর্থাৎ, কোনো না কোনো কারণে যখন সাধারণত স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির গণ্ডির বাইরে থেকে কেউ শিক্ষা গ্রহণ করেন, তখন তাকে দূরশিখনের আওতাভুক্ত বলে ধরা হয়। দূরশিখন তাদের জন্য, যারা বিভিন্ন বাধা সত্ত্বেও শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রসর হতে চান। মুক্ত ও দূরশিখনের অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থীরা অনেক বাধা সত্ত্বেও রেগুলার কোর্সের শিক্ষার্থীদের মতো গুণমানযুক্ত শিক্ষা লাভ করতে চান। এদের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকার উপর। অর্থাৎ মুক্ত ও দূরশিক্ষা বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। মুক্ত ও দূরশিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (ICT) কৌশল, যেমন-টেলিকনফারেন্সিং, ভিডিয়ো ক্যাসেট, ইন্টারনেট, ই-লার্নিং প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। এদের মাধ্যমে দূরশিক্ষার্থী অভিজ্ঞ শিক্ষকের পড়ানোতে অংশগ্রহণ করতে পারে। টেলিফোন সংযোগ ব্যবহার করে অডিয়ো ও ভিডিয়ো যন্ত্রের সাহায্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে দূরশিক্ষার্থী বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের লেকচারে অংশগ্রহণ করতে পারে।

ইন্টারনেট:

ইন্টারনেটে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গবেষণা, পরিবহণ, বাণিজ্য থেকে শুরু করে সরকার, সরকারি পদ্ধতি ও রাজনৈতিক হালচালের প্রায় সব ধরনের তথ্য সেখানে রয়েছে। ইন্টারনেট থেকে তথ্যসংগ্রহের পর সেট ব্যবহার করে দূরশিক্ষার্থী লাভবান হতে পারে। বিশ্বের জনপ্রিয় তথ্য খোঁজার সাইট বা সার্চ ইঞ্জিন হল গুগল (www.google.com), এতে যে-কোনো ভাষায় তথ্য খুঁজে বের করা যায়।

ই-লার্নিং:

এ ছাড়া মুক্ত ও দূরশিক্ষার্থী ই-লার্নিং-এর মাধ্যমে তার প্রয়োজনমতো একই ডিজিটাল কনটেন্ট বা ভিডিয়ো ক্লিপ, ইচ্ছেমতো বারবার ব্যবহার করার সুযোগ পায়। ভিডিয়ো কনফারেন্সিং আবিষ্কারের পরে এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আলাদা আলাদা জায়গায় থেকেও সরাসরি কথা বলতে পারছে। ই- লার্নিং-এর ওয়েবসাইটগুলিতে সাধারণত ভিডিয়ো লেকচার ও কোর্সওয়্যার আপলোড করা থাকে।

ই-লার্নিং ফ্রেমওয়ার্ক হল এমন একটি পরিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতি, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষার মাধ্যম, সর্বজনীনতা, গ্রহণযোগ্যতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নৈতিকতাসহ সামগ্রিক বিষয়ের সমন্বয় রয়েছে। যাদের কোনো কারণে পদাশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এমন অনেকেই এখন নতুন করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছে। ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পড়াশোনার একটি আকর্ষণীয় দিক হল এখানে সর্বশেষ তথ্য পাওয়া সম্ভব। আজকের এই ই লার্নিং ব্যবস্থা পুরোটাই দাঁড়িয়ে আছে ইন্টারনেটের উপর ভিত্তি করে। প্রযুক্তির এই যুগে শিক্ষাগ্রহণের পাশাপাশি শিক্ষা প্রদানটাও তুলনামূলক অনেক সহজ কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু ইউটিউবেই যে কত হাজার হাজার বিষয় শেখার ইন্টার-অ্যাকটিভ ভিডিয়ো আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। মুক্ত ও দূরশিক্ষার্থীরা এ থেকে প্রভৃত সাহায্য পেতে পারে।

আরো পড়ুন,

শিক্ষার অধিকার আইন 2009 অনুযায়ী বিনা ব্যয়ে শিক্ষার অধিকার বিষয়টি বিবৃত করুন। এই আইনটি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সরকারের ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের করণীয় কাজ গুলি লিখুন।

1904 খ্রিস্টাব্দে ঘোষিত লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন।

বৈষম্যহীন সমাজের জন্য সংরক্ষণ নীতি সম্পর্কে আলোচনা করুন।

শিখন অক্ষমতা কাকে বলে? শিখন অক্ষমতার শ্রেণীবিভাগ করুন এবং এদের বৈশিষ্ট্য গুলি লিখুন। এদের কিভাবে চিহ্নিত করবেন এবং শিখনের শিক্ষক ও পিতা-মাতার ভূমিকা লিখুন।

প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী কাদের বলা হয়? প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের উপর প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান গুলি সম্পর্কে লিখুন।

শান্তি শিক্ষা কাকে বলে? শান্তি শিক্ষা ধারণা গুলি লিখুন। শান্তি শিক্ষার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, প্রকৃতি, পরিধি ও গুরুত্ব লিখুন।

অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ শিশু কাকে বলে? বিকলাঙ্গ শিশুকে কিভাবে শনাক্ত করবেন? এদের শিক্ষার ব্যবস্থার কিভাবে করবেন তা লিখুন।

অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা এবং সমন্বয়সাধন বলতে কী বোঝায়? অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষক, পিতা-মাতা, প্রশাসন ও সমাজের ভূমিকা লিখুন।

কম্পিউটার সাক্ষরতা ও কম্পিউটার সহযোগে শিখনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। শিক্ষাক্ষেত্রে ICT-এর ব্যবহার লিখুন।

কোঠারি কমিশন বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার উদ্দেশ্য, শিক্ষার কাঠামো, পাঠক্রম, সম্পর্কে কি বলেছে? অথবা, শিক্ষায় সমসুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ গুলি উল্লেখ করুন।

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading